চীন বিদেশে গোপন থানা বানাচ্ছে কেন ? Why is China building a secret police station abroad?

চিনের সরকার তার নিজের দেশের নাগরিকদের উপর নজরদারি করার জন্য কুখ্যাত. সবচেয়ে বিস্তৃত সিকিউরিটি ক্যামেরার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে চীনের নাগরিকদের উপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয়. চীনের এই নজরদারি কার্যক্রম থেকে দেশের নাগরিক তো বটেই. প্রবাসে বসবাসকারী চীনা নাগরিকদেরও রেহাই নেই. বিগত কয়েক বছর ধরেই বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে চীন বিদেশের মাটিতে গোপনে পুলিশ স্টেশন গড়ে তুলে চীনা নাগরিকদের উপর নজরদারি করছে. অভিযোগ রয়েছে যে নিউইয়র্ক প্যারিস, লন্ডন, রোম, টরেন্টো টোকিও, মাদ্রিদ বা বারসেলোনার মতো শহরে চীনের গোপন পুলিশ বাহিনী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে.

Mar 4, 2023 - 01:31
 0  10
চীন বিদেশে গোপন থানা বানাচ্ছে কেন ? Why is China building a secret police station abroad?
চিনের সরকার তার নিজের দেশের নাগরিকদের উপর নজরদারি করার জন্য কুখ্যাত. সবচেয়ে বিস্তৃত সিকিউরিটি ক্যামেরার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে চীনের নাগরিকদের উপর সার্বক্ষণিক নজরদারি করা হয়. চীনের এই নজরদারি কার্যক্রম থেকে দেশের নাগরিক তো বটেই. প্রবাসে বসবাসকারী চীনা নাগরিকদেরও রেহাই নেই. বিগত কয়েক বছর ধরেই বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় যে চীন বিদেশের মাটিতে গোপনে পুলিশ স্টেশন গড়ে তুলে চীনা নাগরিকদের উপর নজরদারি করছে. অভিযোগ রয়েছে যে নিউইয়র্ক প্যারিস, লন্ডন, রোম, টরেন্টো টোকিও, মাদ্রিদ বা বারসেলোনার মতো শহরে চীনের গোপন পুলিশ বাহিনী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে.
00:00:43
বিদেশের মাটিতে গড়ে ওঠা চিনা পুলিশের স্টেশন সম্পর্কে আলোচনা করা হবে. কি কেন কিভাবের এই পর্বে. কি যেন কিভাবে চ্যানেলে আপনি নতুন হলে অনুরোধ করব সাবস্ক্রাইব করে বেল আইকনটিতে ক্লিক করুন.
00:01:06
চাইনিজ কমিউনিস্ট পার্টি পার্টি চীনের জনগণের জীবনযাত্রা অত্যন্ত কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে. দেশের জনগণ যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের অনুগত থাকবে এবং উৎপাদনমুখী কাজ করবে ততক্ষণ সরকার নাগরিকদের সুযোগ সুবিধা প্রদান করবে. কিন্তু এর ব্যতিক্রম হলেই চীনা নাগরিকদের জীবনে নানান ধরনের দুঃসহ যন্ত্রণা নেমে আসে. বেশ কয়েক বছর আগের একটি রিপোর্টের মাধ্যমে জানা যায়. চিনে প্রায় বিশ কোটি surveillance ক্যামেরা বসিয়ে জনগণের উপর নজরদারি রা হয়. সেই রিপোর্ট অনুযায়ী দুই হাজার বাইশ সালের মধ্যে নতুন করে আরো প্রায় ত্রিশ কোটি ক্যামেরা বসানোর কথা ছিল.
00:01:42
শুধু নজরদারিই নয়, উন্নত ফেসিয়াল recognition প্রযুক্তি ব্যবহার করে চীনা জনগণের আচার ব্যবহার এবং আইন মানার প্রবণতাও বিচার করা হয়. এসব নজরদারি প্রযুক্তি মূলত সামাজিক নিয়ন্ত্রণ, অপরাধী সনাক্তকরণ এবং এমন সব লোকদেরকে খুঁজে বের করতে ব্যবহার করা হয়. যারা ভবিষ্যতে সরকারের বিরোধী হয়ে উঠতে পারে. বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশে নিরাপত্তার স্বার্থে সিকিউরিটি ক্যামেরার ব্যাপক ব্যবহার হলেও চীন এক্ষেত্রে সবচেয়ে ব্যাপক এবং আক্রমণাত্মক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে.
00:02:16
চীন সরকারের নানা ধরনের দমন-পীড়ন এবং ব্যাপক নজরদারি কার্যক্রমে অতিষ্ঠ হয়ে বিগত বিশ বছরে প্রায় সত্তর লাখ লোক চীন থেকে পালিয়ে গেছে. দেশের বাইরে গিয়ে সুখ স্বাচ্ছন্দ্যের জীবন বেছে নেওয়াকে মাতৃভূমির সাথে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে মনে করে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি. তাদের ধারণা এভাবে যদি মানুষ দলে দলে চীন ত্যাগ করে. তাহলে চীনের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা মুশকিল হয়ে যাবে. চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান বুড়োর তথ্য অনুযায়ী দুই হাজার বিশ সালের শেষে দেশটির পনেরো দশমিক পাঁচ শতাংশ জনগণের passport ছিল.
00:02:50
বিগত মাত্র এক দশকে চিনে passport ধারীদের এই সংখ্যা অনেক বেড়েছে. কারণ দশ বছর আগে চীনের মাত্র চার শতাংশ লোকের পাসপোর্ট ছিল. সাম্প্রতিক সময়ে পাসপোর্ট গ্রহীতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও নানা ধরনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে. এর ফলে রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিরা চীনের বাইরে ভ্রমণ করতে পারেন না. এছাড়াও মূলত চারটি কারণে ক্ষমতাসীন চীনা কমিউনিস্ট দেশের মানুষকে বিদেশে যেতে দিতে চায় না. কারণগুলো হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন, মেধা পাচার, জাতীয়তা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা. চীন সরকার চায় বিদেশে থাকা দক্ষ এবং মেধাবী চীনারা যেন চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কাজে লাগে.
00:03:31
এবং এই জাতীয় ব্যক্তিদেরকে চীনের ব্যবসা গড়ে তুলতে বা উচ্চ বেতনের চাকরি পেতে সহায়তা করা হয়. এছাড়া চীনে থাকা উচ্চশিক্ষিত এবং দক্ষ ব্যক্তিরা যেন বিদেশে গিয়ে অন্য দেশের উপকারে না আসে. সেই জন্যও সর্বাত্মক চেষ্টা করে. এছাড়া চীন সরকার নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমানের অংশ হিসেবে তাদের অর্জনগুলো দেশের মানুষের মাঝে বারবার প্রচার করতে থাকে. তারা চায় দেশের জনগণও যেন সরকারি প্রোপাগান্ডা মনেপ্রাণে ধারণ করে দেশের সেবা করতে থাকে. এছাড়া চীন সরকারের আরেকটি ভয় হলো বিদেশে গিয়ে চীনারা যেন তথাকথিত দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা না করে.
00:04:12
চীনের যে সমস্ত নাগরিক দেশ ত্যাগ করে স্থায়ীভাবে বিদেশে পাড়ি জমিয়েছে তাদেরকে আবারও দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে. অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চীনা নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করা হয়. তাতে কাজ না হলে ভয় দেখানো হয়. এবং তাতেও যদি কাজ না হয় তখন ব্ল্যাকমেইল করা হয়. এবং সবশেষ পদক্ষেপ হিসাবে বিদেশেই তাদের গ্রেফতার করে দেশে নিয়ে আসা হয়. সেই জন্য চীনা কমিউনিস্ট পার্টি গোপনে বিদেশের মাটিতে বহু স্টেশন গড়ে তুলেছে. চীনের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এসব থানা পরিচালিত হয়. দুই হাজার তেরো সালে প্যারিসের রাস্তায় চীনা পুলিশের টহল দেওয়ার মতো একটি ঘটনা ফ্রান্স সরকারের নজরে আসে. যা ফরাসি আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন. কিন্তু চীন দাবী করে এটি তাদের কোন সরকারি কর্মকাণ্ড নয়.
00:05:01
বরং একে তারা চীনা সামাজিক সংগঠনের একটি কার্যক্রম হিসেবে উল্লেখ করে.
00:05:06
পরবর্তীতে ইতালির রোম এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি শহরেও চীনা নজরদারির খবর পাওয়া যায়. দুই হাজার আঠারো সালের নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে বলা হয়. চীনের গোপন পুলিশ বাহিনী বিদেশে থাকা দুর্নীতিবাজ এবং চীনা সরকারের সাথে ভিন্নমত পোষণকারী ব্যক্তিদেরকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে জোর করে চিনে ধরে নিয়ে যায়. দুই হাজার উনিশ সালে সার্বিয়ার রাজধানী বেল গ্রেডেও চীনা পুলিশ বাহিনীকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়. দুই হাজার বিশ সালে ব্রিটিশ গণমাধ্যম The Guardian এ প্রকাশিত আরেক প্রতিবেদনে আর্জেন্টিনার বুয়োনোস আইরেসে থাকা চীনা নাগরিকদেরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করার জন্য একটি বিশাল অবকাঠামো থাকার কথা বলা হয়.
00:05:46
যেখানে বৃহৎ নজরদারি প্রযুক্তি সহ বহু সংখ্যক চীনা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়. এসবের পর থেকেই বিদেশে চীনের গোপন পুলিশি স্টেশন থাকার বিষয়টি বিশ্বব্যাপী সবার নজরে আসতে শুরু করে. চীন সরকার এসব গোপন থানার অস্তিত্ব অস্বীকার করে. তবে তাদের মতে চীনের দুর্নীতিবাজ এবং অনলাইন প্রতারকদের গ্রেফতার করার উদ্দেশ্যে তারা কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করে. বিদেশে অবস্থানকারী কোন চীনা নাগরিক অন্য কোন চীনা নাগরিকের দ্বারা প্রতারণার শিকার হলে তারা সেই দেশের পুলিশের বদলে চীনা গোপন পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে পারে.
00:06:22
এছাড়া চীনা নাগরিকদের পাসপোর্ট সহ জরুরি কাগজপত্র সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যায়ও এসব থানা থেকে সহায়তা নেওয়া যায়. সে কারণে এগুলোকে পুলিশ সার্ভিস সেন্টারও বলা হয়. চীনা গোপন পুলিশ বাহিনী বিদেশে থানা খুলে বসার পেছনে মহৎ বিভিন্ন উদ্যোগের কথা বলা হলেও এর আসল উদ্দেশ্য চীনা নাগরিকদের উপর নজরদারি করা. বিদেশে থাকা বিভিন্ন চাইনিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে গোপন থানাগুলো পরিচালিত হয়.
00:06:49
নিউইয়র্কের একটি নুডুলসের দোকানের ভেতরে এই চাইনিজ থানা থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়. এছাড়া আইল্যান্ডের ডাবলুনে থাকা একটি চাইনিজ সুপার শপ. এবং স্কটল্যান্ডের গ্লাসগর একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টের ভেতরে এ ধরনের গোপন থানার সন্ধান পাওয়া যায়.
00:07:07
বিদেশে চীনা পুলিশি স্টেশন গড়ে তোলার মাধ্যমে চীন সরকার তাদের জনগণকে এই বার্তা পৌঁছে দিতে পেরেছে যে চীনারা বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুক না কেন তারা সরকারের নজরদারির বাইরে যেতে পারবে না বিদেশে পালানোর চীনা নাগরিকদের গ্রেফতার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল অনলাইন প্রতারকদের ধরার মাধ্যমে একটা সময় চীনে অনলাইন প্রতারণা ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছিল আপনার অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে অথবা আপনি লটারি জিতেছেন এই জাতীয় মেসেজ দিয়ে অনলাইনে প্রতারণার মাধ্যমে তারা বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিতো এসব প্রতারকরা গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য চীনের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে বিশেষ করে মিয়ানমার এবং লাউসে আশ্রয় নিতো.
00:07:47
এরপর থেকে অত্যন্ত জোরালো কারণ ছাড়া প্রতিবেশী নয়টি দেশে ভ্রমণ এবং বসবাস করার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়. প্রতারকদের গ্রেফতার কার্যক্রম হিসেবে শুরু হলেও পরবর্তীতে চীন সরকার বিদেশে থাকা সকল নাগরিকদের দেশে ফেরানোর বিষয়ে উঠে পড়ে লাগে. সে কারণে যারা সরকারের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিদেশে অবস্থান করছে তাদের সবাইকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করে সবার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়া জারি করা হয়. বিদেশে থাকা ব্যক্তিরা চীনে ফিরতে না চাইলে দেশে থাকা তাদের আত্মীয়দের উপর নানা ধরনের অত্যাচার করা হয়.
00:08:20
তাদের বাড়ির গ্যাস বিদ্যুৎ পানির মতো জরুরী সেবার সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়. কারো কারো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও জব্দ করা হয়. এবং পরিবারের শিশুদেরকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়. বিদেশে ঠিক কতগুলো এরকম গোপন থানা চীনারা গড়ে তুলেছে. তার সঠিক হিসেব বের করা মুশকিল. তবে আর্জেন্টিনা অস্ট্রেলিয়া কানাডা যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশ আফ্রিকান ও ইউরোপীয় দেশে এ ধরনের অবকাঠামো থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে. যার ফলে নিউইয়র্ক প্যারিস লন্ডন, রোম টরান্টো টোকিও, মাদ্রিদ বার্সেলোনার মতো বড় বড় শহরে চীনের গোপন পুলিশবাহিনী তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে.
00:08:57
চীনা কমিউনিস্ট পার্টি যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে চীনকে আগামী বিশ্বের একছত্র ক্ষমতাধর দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়. সেই মহাপরিকল্পনার অংশ হিসেবে চীন যুক্তরাষ্ট্রের চিরশত্রু রাশিয়ার মিলে বিপুল পরিমান স্বর্ণ মজুদ করছে. চীন এবং রাশিয়া তাদের বিপুল পরিমান সোনা দিয়ে কিভাবে আমেরিকার আধিপত্য ঠেকাতে চাইছে. সে সম্পর্কে জানতে চাইলে কি কেন কিভাবের এই ভিডিওটি দেখতে পারেন. কি কেন কিভাবে ভিডিও আমাদের ইউটিউব চ্যানেলের পাশাপাশি কি কেন কিভাবের ফেসবুক পেজেও নিয়মিত প্রকাশ করা হচ্ছে. এখন থেকে আমাদের ভিডিওগুলো ফেসবুকে দেখতে চাইলে কি কেন কিভাবে ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করুন.

আপনার প্রতিক্রিয়া কি?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow

mdjblog "Mdjblog is a leading education platform that provides valuable information and insights about technology and life skills. Designed for younger generations, mdjblog is your one-stop source for all things tech-related and practical learning. Our team of experts delivers clear, concise, and engaging content to help you expand your knowledge and reach your full potential. Whether you're interested in learning about the latest advancements in technology or want to improve your skills, mdjblog has you covered. Join the mdjblog community today and stay ahead of the curve."